সোমবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৫, ০৪:৫১ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
শিরোনাম
খুলনার কয়রায় বিশ্ব শিক্ষক দিবস পালিত সেলসফোর্স নিয়ে এলো এআই এজেন্ট পরিচালনার নতুন সমাধান ‘মিউলসফট এজেন্ট ফেব্রিক’ রংপুরে ঘূর্ণিঝড়ে লণ্ডভণ্ড প্রায় ১২ শ ঘর-বাড়ি  কালীগঞ্জে ধর্ষণ ও নবজাতক হত্যায় প্রেমিকযুগল আটক কালীগঞ্জে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান: তিনটি মামলায় জরিমানা ও কারাদণ্ড কাপাসিয়ায় বিশ্ব শিক্ষক দিবস পালিত: বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভা চেন্নাইয়ে ব্লেন্ডেড লার্নিং বিষয়ক আন্তর্জাতিক সভায় যোগ দিচ্ছেন বাউবির উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ নভেম্বর মাসেই রাষ্ট্রীয় অর্থায়নে তিস্তা মহাপরিকল্পনার কাজ শুরুর দাবি ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের ৫৫তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন দ্রুত তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে গাইবান্ধায় পদযাত্রা, প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান

ক্রিকেট জুয়ার বিষাক্ত ছোবল: কোথায় যাচ্ছে আমাদের যুবসমাজ?

আশিকুর রহমান সবুজ / ১৭ টাইম ভিউ
আপডেট : রবিবার, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২৫, ৬:৫৫ অপরাহ্ণ

আশিকুর রহমান সবুজ

ক্রিকেট ব্যাট আর বলের রোমাঞ্চে মেতে থাকে সারা বিশ্ব, আর আমাদের মতো ক্রিকেটপ্রেমী দেশে এই উন্মাদনা আরও বেশি। কিন্তু এই ক্রিকেটই আজ এক বিষাক্ত নেশার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে, যার নাম জুয়া। চারপাশে কান পাতলেই শোনা যায়, স্কুল-কলেজের ছাত্র থেকে শুরু করে কর্মজীবী যুবক—সকলেই কোনো না কোনোভাবে এই জুয়ার জালে জড়িয়ে পড়ছে।

একসময় জুয়া ছিল গোপন আর সীমিত পরিসরের বিষয়। এখন প্রযুক্তি আর স্মার্টফোনের কল্যাণে এটি হাতের মুঠোয় চলে এসেছে। অনলাইন জুয়ার সাইট আর অ্যাপগুলোর রমরমা বিজ্ঞাপন আমাদের চারপাশে এমনভাবে ছেয়ে গেছে যে, মনে হয় জুয়া যেন কোনো খেলারই অংশ। দ্রুত বড়লোক হওয়ার স্বপ্ন দেখিয়ে এই প্ল্যাটফর্মগুলো আমাদের তরুণ প্রজন্মকে ফুঁসলিয়ে নিয়ে যাচ্ছে এক অন্ধকারের পথে।

ছোট্ট অঙ্কের বাজি দিয়ে শুরু হয় এই নেশা। প্রথম দিকে হয়তো কিছু টাকা জেতা যায়, যা আরও বড় অঙ্কের জুয়া খেলার উৎসাহ জোগায়। কিন্তু এই সাময়িক সাফল্য আসলে এক মায়াজাল। ক্রিকেট ম্যাচের প্রতিটি বল, প্রতিটি রান, প্রতিটি উইকেট—সবকিছুতেই চলে টাকার খেলা। এই নেশায় বুঁদ হয়ে থাকা যুবকরা একসময় তাদের সব সঞ্চয় হারায়। শুধু নিজেদের টাকা নয়, পরিবারের গয়না, বন্ধুদের কাছ থেকে ধার নেওয়া টাকা—সবই চলে যায় এই জুয়ার পেছনে। যখন আর কোনো উপায় থাকে না, তখন জড়িয়ে পড়ে চুরি, ছিনতাইয়ের মতো অপরাধে।

এই আসক্তির ফল শুধু আর্থিক ক্ষতি নয়, এর প্রভাব আরও গভীর। জুয়ার কারণে পড়াশোনায় মন বসে না, কাজকর্মে আগ্রহ থাকে না, পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট হয়। জুয়াড়ির মানসিক চাপ, হতাশা আর উদ্বেগ বেড়ে যায়, যা অনেক ক্ষেত্রে আত্মহত্যার মতো চরম পরিণতি ডেকে আনে।

আজকের এই জুয়া খেলার প্রবণতা শুধু ক্রিকেটীয় উন্মাদনাকে কলুষিত করছে না, এটি আমাদের সমাজের নৈতিক ভিত্তিকে দুর্বল করে দিচ্ছে। আমরা কি এমন একটি ভবিষ্যৎ চাই যেখানে আমাদের তরুণ প্রজন্ম স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে বসে খেলা উপভোগ করার বদলে ঘরে বসে জুয়ার অ্যাপে টাকা হারাবে?

এখনই সময় এই জুয়ার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর। সরকারের উচিত অনলাইন জুয়ার প্ল্যাটফর্মগুলোকে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা এবং এর বিরুদ্ধে উপযুক্ত আইন প্রয়োগ করা। একইসাথে পরিবার, শিক্ষক এবং সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে এই আসক্তির ভয়াবহতা সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে। আমাদের তরুণদের বোঝাতে হবে যে, জীবন জুয়া খেলার মঞ্চ নয়, এটি স্বপ্ন পূরণের জায়গা। খেলাকে খেলার মতোই উপভোগ করতে শেখাতে হবে, জুয়ার নেশায় জীবনকে বিসর্জন দিতে নয়।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর
এক ক্লিকে বিভাগের খবর