নজমুল হক স্টাফ রিপোর্টার গাজীপুর
জাতির শ্রেষ্ঠ সূর্য সন্তানদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও বিনম্র ভালোবাসায় গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (গাকৃবি) যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়েছে শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস ২০২৫। মহান মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত লগ্নে ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর শহিদ হওয়া দেশের শ্রেষ্ঠ শহিদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে দিনব্যাপী নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার তাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে। দিবসটির সূচনা হয় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখার মাধ্যমে। একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৬ শে জুলাই চত্বরে একটি কালো পতাকা রেখে জাতির শোক ও বেদনার প্রতীকী বহিঃপ্রকাশ ঘটানো হয়। সকাল সাড়ে ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা কালো ব্যাজ ধারণ করে শহিদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি সম্মিলিত শ্রদ্ধা জানান। এরপর ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. জিকেএম মোস্তাফিজুর রহমান এর নেতৃত্বে ডিন, পরিচালক, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সমবেত অংশগ্রহণে একটি শোক র্যালি বের হয়। নীরবতা ও শোকের আবহে র্যালিটি ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে উপাচার্য শহিদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি গভীর প্রদ্ধা নিবেদন করে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। পরবর্তীতে শিক্ষক সমিতি ও উপস্থিত শিক্ষকবৃন্দ পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। শ্রদ্ধা নিবেদন পর্ব শেষে পরিচালক (ছাত্রকল্যাণ) প্রফেসর ড. মোহাম্মদ শরীফ রায়হানের সঞ্চালনায় ১৪ ডিসেম্বরের শহিদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে শহিদ মিনারের পাদদেশে একটি তাৎপর্যপূর্ণ সংক্ষিপ্ত আলোচনাপর্ব অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন উপাচার্য প্রফেসর ড. জিকেএম মোস্তাফিজুর রহমান, উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. এম. ময়নুল হক, ট্রেজারার প্রফেসর ড. মোঃ সফিউল ইসলাম আফ্রাদ, সুইজারল্যান্ডের এগ্রোস্পেস এর প্রধান ড. স্টিফেন মান, শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. মোঃ আবু আশরাফ খান, সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. মোঃ মসিউল ইসলাম, রেজিস্ট্রার মোঃ আবদুল্লাহ্ মৃধা এবং সহকারী রেজিস্ট্রার (আইন ও এস্টেট) আবু হানিফ পালোয়ান। এ সময় বক্তারা বলেন, “শহিদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মত্যাগ জাতির ইতিহাসে এক অনন্য দৃষ্টান্ত, যা নতুন প্রজন্মকে দেশপ্রেম, মানবতা ও নৈতিকতার আলোকে আলোকিত করে চলেছে। তবে শহিদদের আত্মত্যাগ যেন ভূলুণ্ঠিত না হয় সেদিকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তাঁরা।” পরে উপাচার্য এ ঐতিহাসিক দিবসের তাৎপর্যের উপর জ্ঞানগর্ব বক্তব্য প্রদান করেন। বক্তব্যে উপাচার্য শহিদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বলেন, ” জাতিকে মেধাশূন্য করার লক্ষ্যেই পাক ও তাদের দোসররা আমাদের বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছিল। সেই ১৭৫৭ সালে যেমন মীর জাফরদের কারণে ২শ বছর আমাদের পরাধীন ও শোষণের শিকার হতে হয়েছে। সেই মীর জাফরের দোসররা এখনো দেশে সক্রিয় রয়েছে। দেশিয় দোসর ও মুনাফিকদের জন্যই স্বাধীনতার মহান ঘোষক শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে দেশের জন্য জীবন দিতে হয়েছিল। সুতরাং দেশপ্রেমের অংশ হিসেবে দল-মত নির্বিশেষে সকলকে একতাবদ্ধ হয়ে এ দেশকে রক্ষা করতে হবে।” কর্মসূচির অংশ হিসেবে বাদ যোহর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে শহিদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় বিশেষ দোয়ার আয়োজন করা হয়।