মোঃনাসির উদ্দিন গাজীপুর জেলা প্রতিনিধি
পুলিশি সেবায় স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও জনবান্ধব প্রশাসন নিশ্চিত করতে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি) চালু করেছে যুগান্তকারী উদ্যোগ ‘গণপুলিশিং সার্ভিস’।
এই ডিজিটাল ব্যবস্থার মাধ্যমে থানায় আগত প্রতিটি সেবা প্রার্থীর তথ্য, ছবি ও সেবার অগ্রগতি অনলাইনে সংরক্ষণ ও রিয়েল টাইমে তদারকি করা যাবে।
আজ মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) সকালে গাজীপুর সদর মেট্রোপলিটন থানায় আনুষ্ঠানিকভাবে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ জাহিদুল হাসান।
এ সময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ডিসি (হেডকোয়ার্টার) জাহিদুল ইসলাম, ডিসি (অপরাধ উত্তর) রবিউল হাসান, ডিসি (লজিস্টিক) শফিকুল ইসলাম, সদর মেট্রো থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মেহেদী হাসান এবং অন্যান্য ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা।
‘গণপুলিশিং সার্ভিস’-এর মাধ্যমে থানায় আগত প্রত্যেক নাগরিকের তথ্য ডিজিটালি নিবন্ধিত হবে এবং ছবি সংযুক্ত থাকবে। সেবা প্রার্থীর আবেদন কোন ধাপে আছে, কে দায়িত্বে রয়েছেন এবং কত সময় ধরে অপেক্ষমাণ—সব তথ্য তাৎক্ষণিকভাবে দেখতে পারবেন পুলিশ কমিশনারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
যদি কোনো আবেদন বা অভিযোগ নির্ধারিত সময়ে নিষ্পত্তি না হয়, সিস্টেমে সেটি ‘পেন্ডিং’ হিসেবে প্রদর্শিত হবে। এ অবস্থায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে ব্যাখ্যা দিতে হবে কেন বিলম্ব হচ্ছে—ফলে দাপ্তরিক জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কমিশনার জাহিদুল হাসান বলেন, “জনগণের আস্থা অর্জন এবং পুলিশি সেবাকে আরও স্বচ্ছ, সময়োপযোগী ও প্রযুক্তিনির্ভর করতে এই ‘গণপুলিশিং সার্ভিস’ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। আমরা চাই, থানায় আগত প্রতিটি নাগরিক দ্রুত ও যথাযথ সেবা পান।”
জানা গেছে, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের আটটি থানার মধ্যে ছয়টি থানায় ইতিমধ্যে এ কার্যক্রম চালু হয়েছে। সেবা প্রার্থীরা সহজেই সেবা পাচ্ছেন। বাকি দুটি থানায় (যার মধ্যে কোনাবাড়ী থানা ও বাসন থানা রয়েছে) কার্যক্রম চালুর প্রক্রিয়া চলমান।
এ উদ্যোগের মাধ্যমে থানার কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ, নাগরিক সেবার মানোন্নয়ন ও প্রশাসনিক স্বচ্ছতা একসঙ্গে নিশ্চিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
‘গণপুলিশিং সার্ভিস’ মূলত এক ধরনের রিয়েল-টাইম মনিটরিং সিস্টেম, যা পুলিশের মাঠপর্যায়ের সেবা প্রদানে বিপ্লব ঘটাবে। এটি ডিজিটাল বাংলাদেশ ও স্মার্ট পুলিশিং ধারণার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ একটি সময়োপযোগী পদক্ষেপ।
অংশগ্রহণকারীরা মনে করেন, এ কার্যক্রম জনগণ ও প্রশাসনের মধ্যে আস্থার সম্পর্ক আরও মজবুত করবে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।