মোঃ কামাল হোসেন, অভয়নগর প্রতিনিধি
যশোরের অভয়নগর উপজেলায় ভোর ও সন্ধ্যায় কুয়াশা পড়ছে। গত দুই সপ্তাহ যাবত এ কুয়াশার মধ্য দিয়ে শীতের শুরু হয়েছে। দিন যতই যাচ্ছে শীত ততই বাড়ছে। আর এই শীতের সঙ্গে সঙ্গে চলছে চিতই আর ভাপা পিঠা বিক্রির ধুম। অভয়নগরে বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিন দেখা যায়, গরম গরম ভাপা পিঠা নামছে মাটির চুলা থেকে। পিঠাপ্রেমী ক্রেতারা সারিবদ্ধ হয়ে পিঠা কিনছেন। কেউ নিয়ে যাচ্ছেন। কেউ আবার দাঁড়িয়ে খাচ্ছেন। কোনো চুলায় ভাপাপিঠা, কোনোটিতে চিতই, কোনোটিতে ডিম বা অন্য কোনো পিঠা। শীত যতই বাড়ছে এসব পিঠাপুলির দোকানগুলোতে ভিড় বাড়ছে। দোকানগুলোয় পিঠার পাশাপাশি থাকছে হরেক রকম ভর্তা। শনিবার (২৫ নভেম্বর) সরজমিনে দেখা যায়, প্রতিদিন ভোর ও বিকাল থেকেই পিঠা বিক্রির ধুম পড়ে উপজেলা নওয়াপাড়া রাস্তার মোড়ে-মোড়ে অস্থায়ীভাবে গড়ে ওঠা দোকানগুলোয়। সন্ধ্যা হলেই বেড়ে যায় ক্রেতার সমাগম, যা মধ্যরাত পর্যন্ত থাকে। নানা বয়সী মানুষ পিঠা খেতে আসছেন এসব পিঠার দোকানে। রসুন-মরিচবাটা, ধনিয়াপাতা বাটা, শুঁটকি, কালোজিরা, সর্ষে ভর্তাসহ নানা রকম উপকরণ মিলিয়ে বিক্রি করা হয় চিতই পিঠা। কথা হয় নওয়াপাড়া নূরবাগ এলাকায় পিঠা বিক্রেতা বিউটি বেগমের সাথে, তিনি বলেন, সকাল থেকে রাত পর্যন্ত পাশাপাশি চারটি চুলায় পিঠা বানিয়েও সরবরাহে হিমশিম খেতে হচ্ছে। কারণ পিঠা আগে তৈরি করে রাখার উপায় নেই। ক্রেতাদের সামনেই তৈরি করে গরম গরম পরিবেশন করতে হয়। ক্রেতারা দোকানে বসে পিঠা খাওয়ার পাশাপাশি বাড়ির লোকদের জন্য নিয়ে যান। আরো বলেন, শীতকালে পিঠা বিক্রি করে থাকি। বছরের বাকী সময় অন্য কাজ করি। পিঠা বিক্রির আয়ে সংসার চলে। ধান থেকে চাল এবং সেই চালের গুঁড়া পিঠা তৈরির মূল উপাদান। এক কেজি চালের গুঁড়া দিয়ে ২০টি চিতই বা ভাপা পিঠা তৈরি করা যায়। শীতে ভাপা আর চিতই পিঠার কদর বেশি। শীত বাড়লে পিঠা বিক্রিও বেড়ে যায়। প্রতিটি পিঠা বিক্রি হয় ১০ টাকা করে। নওয়াপাড়া
পৌরসভার বুইকরা গ্রামের আবু সফিয়ান বলেন, ১০ টাকায় শুঁটকি, কালোজিরা, সর্ষে ভর্তা দিয়ে চিতই পিঠা আর নারকেল ও খেজুর গুড় দিয়ে সুস্বাদু ভাপা পিঠা পাওয়া যায়। ভালো লাগে, তাই নিয়মিত খাই।
বেঙ্গলগেট এলাকার যুবক মশিয়ার রহমান বলেন, এ পথে যাওয়ার সময় ভাপা ও চিতই পিঠার পসরা সাজানো দেখে ভালো লেগেছে। এসব পিঠা খেয়ে অনেক মজা পেয়েছি। ড্রাইভারপাড়ার দুজন ক্রেতা বলেন, আমরা প্রায়ই বউবাজার এসে পিঠা খাই। চাল ভেঙে আটা করে পিঠা বানানোর সময় সুযোগ হয় না। ঝামেলা ছাড়া স্বল্প দামে হাতের নাগালে এখন পিঠা পাই। তাই এসব পিঠাই আমাদের ভরসা।